ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার উচ্চ শিক্ষা পেশাগত দায়িত্ব। আধুনিক বিশ্বে যে দেশ কম্পিউটার বা ইনফরমেশন টেকনোলজিতে যত উন্নত, সে দেশ ততই বেশি সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী। গত দশকে থেকে আমাদের দেশেও কম্পিউটারাইজেশনের ক্ষেত্রে বিপ্লবী পরিবর্তন শুরু হয়েছে। শিল্প, সাহিত্য, ব্যাংক, বীমা, শিল্প ও কারখানাগুলিতে অধিক হারে কম্পিউটারের ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে কোন ধরনের ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান বা শিল্পে তথ্য সংরক্ষণ ও বিভিন্ন কর্মকান্ড সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য কম্পিউটার অত্যাবশ্যক। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের প্রতি নির্ভরশীলতা বাড়ছে।
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার উচ্চ শিক্ষা পেশাগত দায়িত্ব
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই শাখায় আলোচিত আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- মাইক্রোকন্ট্রোলার, মাইক্রোপ্রসেসর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টেস্টিং, সার্কিট ডিজাইন, হার্ডওয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং।
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সেই শাখা যা কম্পিউটারের সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারের গবেষণা এবং বিকাশ নিয়ে কাজ করে। একে বলা যেতে পারে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সাইন্স এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সামষ্ঠিক জ্ঞান।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সফটওয়্যার কিংবা হার্ডওয়্যার এঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার বেছে নিতে পারে উপযুক্ত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে।
আরো দেখুন
ডিপ্লোমা আর্কিটেকচার এন্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার
আজকাল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলি যেমন পাওয়ার সেক্টর, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উৎপাদন ইত্যাদি কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল। এই সকল প্রতিষ্ঠান গুলোতে কম্পিউটার সিস্টেমের উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য কম্পিউটার প্রকৌশলীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব জায়গাতেই কমপিউটার নির্ভর ব্যবস্থাপনা। ফলে প্রতিটি দফতর, শিল্পে আইটি এক্সপার্ট এবং কম্পিউটার প্রকৌশলী অত্যাবশ্যক হয়ে দাড়িয়েছে। এছাড়া আউটসোর্সিং- এর মাধ্যমে আয় ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যেখানে কম্পিউ্টার সম্পর্কিত সেবা একটি বড় স্থান দখল করে আছে।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা হোল্ডারা সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারে।তবে, বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের তুলনায় বেশি। সফটওয়্যার সাধারনত হার্ডওয়্যারের তুলনায় ঘনঘন আপডেট হয়ে থাকে, এটিই সম্ভাব্য কারন। একই হার্ডওয়্যারে কাজ করার জন্য সফটওয়্যার প্রোগ্রামের বেশ কয়েকটি সংস্করণ ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে হার্ডওয়্যারগুলো ভালভাবে কাজ করে থাকলে প্রতিষ্ঠান হার্ডওয়ার আপগ্রেড করার জন্য তেমন কোন উদ্যোগ নেয় না।
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কোথায় করবেন
সারা দেশ জুড়ে ৪৯ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং–এ ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, গ্রিন ইউনিভার্সিটি সহ আরও কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করা যায়।
ভর্তির যোগ্যতা
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমার চার বছর মেয়াদি আট সেমিস্টারের এই কোর্সে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার পর যে কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে।
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মান
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটির মান HSC সার্টিফিকেটের তুলনায় বেশি, তবে একই বিষয়ের বিএসসি ডিগ্রির তুলনায় কম। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা স্তর।
ডিপ্লোমা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার উচ্চ শিক্ষা পেশাগত দায়িত্ব

বিএসসি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সকল সেক্টরে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ আছে সেগুলো হল-
- কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
- B.sc ডাটা ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি
- B.sc ইনফরমেশন সাইন্স
- B.sc ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি
- মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি
- B.sc কম্পিউটার সাইন্সসফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
এছাড়া দেশের বাইরেও এ সকল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করা সম্ভব।
আরো দেখুন
ডিপ্লোমা অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
শিপ বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
ডিপ্লোমা রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশন ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব
একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব
একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার-এর মধ্যে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারে। কম্পিউটার প্রকৌশলীদের প্রধান কাজ হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অথবা সফটওয়্যারের ডিজাইন, পরিকল্পনা, যাচাইকরণ এবং তত্ত্বাবধান করা।কম্পিউটার প্রকৌশলীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রধানত কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের সিস্টেম ও অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে এবং অন্যান্যরা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করে যেটা কিনা পুরো সিস্টেমের মধ্যে ব্যবহার করে কোন কাজ সম্পন্ন করা হয়।
কম্পিউটার প্রকৌশলের ক্ষেত্র হার্ডওয়্যার প্রকৌশলী এবং সফ্টওয়্যার ডেভেলপার উভয়ের জন্য ভিন্ন চাকরির ক্ষেত্র থাকলেও অনেক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা কোন একটি প্রতিষ্ঠানে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উভয়ের সমন্বিত সিস্টেম নিয়ে কাজ করতে পারে।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার যেসব পদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন সেগুলো হল-
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- ক্লাউড আর্কিটেক্ট
- হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- সিস্টেম এনালিস্ট
- প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার
- ওয়েব ডিজাইনার
- নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার
- প্রোগ্রামার
- সফটওয়্যার টেস্টার
- অ্যাপ ডেভ্লপার
- টেকনিক্যাল রাইটার
- ডাটাবেস ইঞ্জিনিয়ার
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্র
বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার এর চাহিদা রয়েছে ।নিচে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্র রয়েছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হল:
- পাওয়ার প্লান্ট, পিডিবি, পল্লী বিদ্যুৎ, ডেসকো, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান।
- সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানসমূহ।
- বায়োটেকনোলজি সেক্টর।
- টেলিকম্যুনিকেশন সেক্টর।
- ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস সেক্টর।
- সৌর বিদ্যুৎ ও পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র।
- ইনফরমেশন এ্যান্ড কম্যুনিকেশন টেকনোলজি সেক্টর।
- সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলোতে মেনটেইন্যান্স ও আইটি অফিসার হিসেবে।
- শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি।
- কম্পিউটার ইন্ডাস্ট্রি।
- ই-কমার্স সেক্টর।
- বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া।
একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের আয়
ডিপ্লোমা করার পর পরই যদি কেউ চাকরিতে ঢুকতে চায়, তবে এই লেভেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতন হতে পারে ২০-২৫ হাজার টাকা। তবে যদি হার্ডঅয়্যার বা সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর উপর অ্যাডভান্স লেভেলের ডিগ্রি এবং অভিজ্ঞতা থাকে তবে বেতন অনেক ভাল হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে যা আরও অনেক বেশি হয়ে থাকে।কম্পিউটার টেকনোলজি উন্নতির ফলে আমাদের দেশে বহুমুখী কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। তথ্য প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার প্রকৌশলে শিক্ষিত তরুণদের অনেকেই দেশ ও বিদেশে সম্মানজনক পেশায় জড়িত আছে।
ডি ইঞ্জিনিয়ার্স নিউজ এর পোর্টালে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকল আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের নিউজ পোর্টাল ভিজিট করুন এবং ফেসবুক পেজে লাইক/ফলো দিয়ে রাখুন।
2 comments
Pingback: ডিপ্লোমা শিপ বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব -
Pingback: ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংঃ ক্যারিয়ার, উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত দায়িত্ব -