মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-(MBSTU) হচ্ছে বাংলাদেশের একটি সরকারী পর্যায়ে পরিচালিত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত টাঙ্গাইলের সন্তোষে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের ১২ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি রাজনৈতিক নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামানুসারে। এখানকার পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি। পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এখানে শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-(MBSTU)
স্নাতক: | ৪০০০ |
ধরনঃ | পাবলিক, সহ-শিক্ষা |
স্থাপিতঃ | ১২ অক্টোবর ১৯৯৯ |
উপাচার্য :
আচার্য: |
অধ্যাপক ড. মোঃ আলাউদ্দিন
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গঃ | ২০৬ |
স্নাতকোত্তর: | ১৬৭১ |
প্রতিষ্ঠাতা: | |
অবস্থানঃ |
বাংলাদেশ টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ ২৪.২৩৫২° উত্তর ৮৯.৮৯১৮° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গনঃ | ৭০.৬৯ একর (২৮.৬১ হেক্টর) |
অধিভুক্তি: | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
সংক্ষিপ্ত নাম: | (মাভাবিপ্রবি)(MBSTU) |
ওয়েবসাইটঃ | mbstu.ac.bd |
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস
মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। তিনিই ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেন নি, অবশেষে ১৯৭০ সালে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৭০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মাওলানা ভাসানী “আমার পরিকল্পনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়” শিরোনামে লিখিত নিবন্ধের মাধ্যমে তাঁর প্রস্তাবিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত প্রস্তাব করেন। তিনি জীবদ্দশায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, কিন্তু তিনিই মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কাজ শুরু করে যান।
১৯৮২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান ভাসানীর শিক্ষা বিস্তারের পরিকল্পনায় একটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বের ১২ সদস্যবিশিষ্ঠ একটা কমিটি গঠন করে দেন। উক্ত কমিটি ১৯৮৩ সালে ২২ মে সদুরপ্রসারী সুপারিশ রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালের ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষাবিদ ডক্টর মীর ফকরুজ্জামানকে চেয়ারম্যান ও সৈয়দ ইরফানুল বারীকে সদস্যসচিব করে ৯ সদস্যবিশিষ্ঠ সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সইবি) ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে দেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন জটিলতাই কার্যক্রম আর সামনে এগায় নি।
১৯৯৬ সালে সরকারি উদ্যোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারের প্ররিকল্পনা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসাবে টাঙ্গাইলে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। ১৯৯৭ সালে এডিবির আর্থিক সহায়তায় তৎকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নেয় পুরাতন জেলাগুলোতে (যেগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় নেই) একটি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্থাপনের। এর পরিপ্রক্ষিতে সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সইবি) ট্রাস্টি বোর্ড সরকারের নিকট সন্তোষেই একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব পেশ করেন।
অবস্থান
MBSTU টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিধন্য সন্তোষে অবস্থিত।
বিস্তারিত দেখুন গুগল ম্যাপে
যোগাযোগের ঠিকানা হল-
- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশ টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ
- যোগাযোগ : +880921 55399
- ইমেইল : registrar@mbstu.ac.bd
- ওয়েবসাইট :mbstu.ac.bd
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ এবং বিভাগ সমূহ
জীববিজ্ঞান অনুষদ | ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ | |
১.কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ। | ১.খাদ্যপ্রযুক্তি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ। | ১.ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ |
২.তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। | ২.পরিবেশবিজ্ঞান ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। | ২.হিসাববিজ্ঞান বিভাগ। |
৩.বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগ। | ৩.অপরাধবিদ্যা ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগ। | ৩.ব্যবস্থাপনা বিভাগ। |
৪.ইইই বিভাগ। (প্রস্তাবিত) | ৪.জৈবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল বিভাগ। | |
৫.ফার্মেসী বিভাগ। | ||
৬.বায়োকেমিস্ট্রি এ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ। |
বিজ্ঞান অনুষদ | সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ | কলা অনুষদ |
১.গণিত বিভাগ। | ১.অর্থনীতি বিভাগ। | ১.ইংরেজি বিভাগ। |
২.পরিসংখ্যান বিভাগ। | ||
৩.রসায়ন বিভাগ। | ||
৪.পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। |
শিক্ষাব্যবস্থা এবং ক্লাসের সময়সূচী
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবর্ষ দুটি সেমিস্টারে বিভক্ত। একটি সেমিস্টার ১৮.৪ সপ্তাহ ধরে চলে এবং প্রত্যেক সপ্তাহে পাঁচদিন ক্লাস হয়। একটি নতুন শিক্ষাবর্ষ সাধারণত চলমান শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরেই শুরু হয়ে থাকে। প্রত্যেক সেমিস্টারের শেষে একটি সাধারণ পরীক্ষা (সেমিস্টার ফাইনাল) নেয়া হয়। এছাড়াও পুরো সেমিস্টার জুড়েই শিক্ষার্থীদের নানারকম ক্লাস টেস্টে অবতীর্ণ হতে হয়।
MBSTU এর লাইব্রেরী
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটিতে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক বইয়ের বিশাল সংগ্রহ ছাড়াও বিভিন্ন সম্পূরক বিষয়ের ওপরেও পর্যাপ্ত বই রয়েছে। এর বাইরেও নানাবিধ বিষয়ের ওপর রয়েছে প্রচুর বই। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে গ্রন্থাগারেই রয়েছে জেরক্স মেশিন। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ছাড়াও প্রত্যেকটি বিভাগেই রয়েছে সেমিনার লাইব্রেরী; যেখানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দরকারি বইয়ের পর্যাপ্ত সংগ্রহ রয়েছে।
MBSTU এর ক্যাম্পাস
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিধন্য সন্তোষে অবস্থিত। এই ক্যাম্পাসের আয়তন প্রায় ৭০.৬৯ একর। এই জায়গার ভেতরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদ, প্রশাসনিক ভবন, সাতটি আবাসিক শিক্ষার্থী হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, খেলার মাঠ ইত্যাদি অবস্থিত। এছাড়া ক্যাম্পাসের অধিভুক্ত জায়গার ভেতরই মাওলানা ভাসানীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত ঐতিহাসিক দরবার হল, প্রখ্যাত সুফি সাধক পীর শাহ্ জামানের নামানুসারে পীর শাহ্ জামান দীঘি, মাওলানা ভাসানীর মাজার, একটি মসজিদসহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এই অধিভুক্ত জায়গা ছাড়াও সন্তোষের অদূরে রথখোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-সম্পত্তি রয়েছে, যেখানে শিক্ষকদের আবাসন প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন।
MBSTU এর হল সমূহ
শিক্ষার্থীদের আবাসন এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সংযুক্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭টি হল রয়েছে। প্রত্যেক হল পরিচালনার জন্য একজন প্রভোস্ট এবং একজন সহকারী প্রভোস্ট নিযুক্ত আছেন। হলগুলো হলো :
ছাত্র হল |
ছাত্রী হল |
১.জননেতা আব্দুল মান্নান হল। | ১.আলেমা খাতুন ভাসানী হল। |
২.বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। | ২.শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হল। |
৩.শহীদ জিয়াউর রহমান হল। | ৩.বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। (নির্মানাধীন) |
৪.শেখ রাসেল হল। (নির্মানাধীন) |
ভর্তি কার্যক্রম
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ে কেউ ভর্তি হতে চাইলে তাকে অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ণ হতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর আগ্রহী প্রার্থীদের ভর্তির আবেদন করতে হয়, যাদের মধ্য হতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজি বিষয়ে প্রাপ্ত গ্রেডের ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করতে হয়।
চিকিৎসা কেন্দ্র
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সামনেই মেডিকেল সেন্টার অবস্থিত। তিনজন এমবিবিএস ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে মেডিক্যাল অফিসার ও কর্মচারীদের নিয়ে গড়ে উঠা মেডিক্যাল সেন্টারটি ছাত্রদের সকল শারীরিক অসুস্থতার আরোগ্য সাধন করে থাকে। এখানে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বিনামুল্যে ঔষধ সরবরাহ করে। তাছাড়া জরুরি প্রয়োজনের জন্য মেডিক্যাল সেন্টারের নিজস্ব দুইটি এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।
ডি ইঞ্জিনিয়ার্স নিউজ এর পোর্টালে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকল আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের নিউজ পোর্টাল ভিজিট করুন এবং ফেসবুক পেজে লাইক/ফলো দিয়ে রাখুন।