শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-(শেকৃবি) হচ্ছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীনতম কৃষি শিক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। অনন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত। ১৯৩৮ সালে দি বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট নামে প্রতিষ্ঠিত কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-(শেকৃবি)
উচ্চতর কৃষি শিক্ষার বিস্তারের মাধ্যমে দেশে কৃষি উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব বহনে সক্ষম তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কৃষিবিদ এবং কৃষিবিজ্ঞানী তৈরি করাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য পাশাপাশি কৃষি গবেষণার যথাযথ প্রচার ও প্রসার করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।
ধরনঃ | পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিতঃ | ১৫ জুলাই ২০০১; ২০ বছর আগে |
ডিন: | অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশিদ ভুঁইয়া (কৃষি অনুষদ) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান সরকার (কৃষিব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা অনুষদ) অধ্যাপক ড. লাম ইয়া আসাদ (এনিম্যাল সাইন্স ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ) অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব (ফিসারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সাইন্স অনুষদ) অধ্যাপক ড. অলক কুমার পাল (স্নাতকোত্তর শিক্ষা) |
উপাচার্য :
আচার্য: |
অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গঃ | ৩২২ |
শিক্ষার্থী: | ২,৫০০ |
অবস্থানঃ | শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, ১২০৭, বাংলাদেশ |
শিক্ষাঙ্গনঃ | শহুরে, ৮৬.৯২ একর (৩৫.১৯ হেক্টর) |
অধিভুক্তি: | বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
সংক্ষিপ্ত নাম: | শেকৃবি |
ওয়েবসাইটঃ | www.sau.edu.bd |
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১১ ডিসেম্বর ১৯৩৮ সালে “দি বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট” নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক এটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি এই অঞ্চলের প্রথম কৃষি শিক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৭ সালে এটি পূর্ব পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট নামধারণ করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট -এ পরিবর্তন করা হয়।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবি-তে স্থানান্তরিত হয়। ১৫ জুলাই ২০০১ সালে এই প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ১৭তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ সালের জুলাইতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০০১ সালের ১৫ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং অধ্যাপক মোঃ শাদত উল্লাহকে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
অবস্থান
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত।
বিস্তারিত দেখুন গুগল ম্যাপে
যোগাযোগের ঠিকানা হল-
- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, ১২০৭, বাংলাদেশ
- যোগাযোগ :+880244814020
- ইমেইল :info@sau.edu.bd
- ওয়েবসাইট :www.sau.edu.bd
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত। শেকৃবি ক্যাম্পাস সবুজের সমারোহে ভরা, নির্মল বাতাস, নানা রঙের ফুল-পাখি-গাছপালায় পরিপূর্ণ। এখানে আছে অনেকগুলো ফসলি ও গবেষণার জমি, ফুল, ফল ও ঔষধি বৃক্ষের বাগান, বটতলা, কাশবন, মেঠো পথ, কয়েকটি পুকুর, বিশালাকার খেলার মাঠ ইত্যাদি। ঢাকার প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে বেড়াতে আসেন। এখানে সবুজ গাছ-গাছালির ফাঁকে ফাঁকেই অবস্থিত একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, কেন্দ্রীয় গবেষণাগার, আবাসিক ভবন, মসজিদ, মন্দির, ক্যাফেটারিয়া ও অন্যান্য ভবন।
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪ টি অনুষদের অধিনে ৩১টি বিভাগ রয়েছে।
কৃষি অনুষদ
- কৃষিতত্ত্ব বিভাগ
- উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ
- মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ
- কৃষি উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
- কৃষি সম্প্রসারণ এবং তথ্যপদ্ধতি বিভাগ
- কীটতত্ত্ব বিভাগ
- ভাষা বিভাগ
- কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ
- কৃষি প্রকৌশল বিভাগ
- উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ
- প্রাণরসায়ন বিভাগ
- কৃষি রসায়ন বিভাগ
- কৃষি বনায়ন এবং পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ
- মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগ
- জৈব প্রযুক্তি বিভাগ
- বীজ প্রযুক্তি বিভাগ
কৃষিব্যবসা ব্যবস্থাপনা অনুষদ
- কৃষিব্যবসা ও বিপণন বিভাগ
- অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- দারিদ্র্য ও উন্নয়ন গবেষণা বিভাগ
- কৃষি অর্থনীতি বিভাগ
- কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগ
পশুপালন ও চিকিৎসা অনুষদ
- পশু উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- পশু পুষ্টি, কৌলিতত্ত্ব ও প্রজনন বিভাগ
- শারীরস্থান কোষতত্ত্ব ও শারীরবিদ্যা
- ডেইরি সায়েন্স বিভাগ
- মেডিসিন ও পাবলিক হেলথ বিভাগ
- মাইক্রোবায়োলজি ও প্যারা সাইটোলজি
- রোগতত্ত্ব বিভাগ
- ফারমাকোলজি ও টক্সিকোলজি
- পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগ
- সার্জারি ও থেরিওজেনলজি
ইনস্টিটিউট
- ইনস্টিটিউট অফ সীড টেকনোলজি
আবাসিক হলসমূহ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য তিনটি এবং ছাত্রীদের জন্য দুইটি হল রয়েছে। প্রতিটি হল পরিচালনার দায়িত্বে আছেন একজন প্রভোস্ট এবং একাধিক সহকারী প্রভোস্ট।
ছাত্র হল |
ছাত্রী হল |
১.শেরেবাংলা হল (প্রভোস্ট- মো: হাসানুজ্জামান আকন্দ) | ১.বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল (প্রভোস্ট- অধ্যাপক নুরজাহান বেগম) |
২.নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা হল (প্রভোস্ট- অধ্যাপক ড. ইসহাক) | ২.কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল (প্রভোস্ট- অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস) |
৩.কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল (প্রভোস্ট- অধ্যাপক ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন) |
শেকৃবি এর লাইব্রেরি
একাডেমিক ভবনের পশ্চিম ব্লক একসময় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে প্রশাসনিক ভবনের ঠিক পূর্ব পাশে ছয়তলা বিশিষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং আরএফআইডি টেকনোলজি সমৃদ্ধ এই গ্রন্থাগারে রয়েছে ৪০,০০০ এরও বেশি দেশি বিদেশি বই, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নাল ও ম্যাগাজিনের এক বিশাল সংগ্রহশালা। এছাড়াও এই গ্রন্থাগারের জন্য একটি অ্যাপ SAUL ডেভেলপ করা হয়েছে যার মাধ্যমে যখন তখন যেখানে সেখানে বসে দরকারি বই পড়া ও তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।
শেকৃবি এর ভর্তি কার্যক্রম
স্নাতক কোর্স
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দ্বিতীয়বারের মত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান এর প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে জিপিএ ৩.৫০ সহ সর্বমোট জিপিএ ৮.০০ থাকাদের মধ্য থেকে মোট আসনসংখ্যার ১০ গুণ শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।
আসন সংখ্যা
সর্বমোট আসনসংখ্যা = ৬২০
- কৃষি অনুষদ = ৩৫০
- কৃষিব্যবসা ব্যবস্থাপনা অনুষদ=১২০
- প্রাণী বিজ্ঞান এবং ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ=১০০
- মৎস্য, অ্যাকুয়াকালচার অনুষদ=৫০
অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা
- প্রশাসনিক ভবন
- তিনটি অনুষদ ভবন
- কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার
- কেন্দ্রীয় গবেষণাগার
- মিলনায়তন
- একাধিক সেমিনার কক্ষ
- ছাত্রছাত্রীদের পাঁচটি আবাসিক হল ( ছাত্রদের ৩ টি এবং ছাত্রীদের ২ টি)
- পোল্ট্রি ফার্ম
- গোশালা
- মেশিনারি ফার্ম
- গবেষণা প্লট
- নিজস্ব বাস ও মাইক্রোবাস
- মসজিদ
- মন্দির
- ক্যাফেটারিয়া
- জিমনেসিয়াম
- মেডিকেল সেন্টার
- খেলার মাঠ
শিক্ষা কার্যক্রম
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি কোর্স চালু রয়েছে- স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ও ডক্টরেট। এখানে প্রায় ৩০৩ জন শিক্ষক শিক্ষাদান করছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদ, ৩৫ টি বিভাগ রয়েছে।
ডি ইঞ্জিনিয়ার্স নিউজ এর পোর্টালে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকল আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের নিউজ পোর্টাল ভিজিট করুন এবং ফেসবুক পেজে লাইক/ফলো দিয়ে রাখুন।