পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-(পবিপ্রবি) হচ্ছে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয় জনগণের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৯৭২ সালে একটি বেসরকারি কলেজ হিসেবে একটি উচ্চ মাধ্যমিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গড়ে ওঠে। এরপর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইউ), ময়মনসিংহের অধিভুক্তির অধীনে পটুয়াখালী কৃষি কলেজে পরিণত হয় বিএসসি এজি অফার করা কৃষি স্নাতক তৈরির লক্ষ্যে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-(পবিপ্রবি)
বিশ্ববিদ্যালয়টি ০৮ জুলাই ২০০০ তারিখে তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০২-এ এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেন।
ধরনঃ | পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিতঃ | ৮ জুলাই ২০০০ |
উপাচার্য :
আচার্য: |
অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গঃ | |
অবস্থানঃ | পটুয়াখালী, বাংলাদেশ |
শিক্ষাঙ্গনঃ | ৮৯ একর |
অধিভুক্তি: | বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
সংক্ষিপ্ত নাম: | পবিপ্রবি |
ওয়েবসাইটঃ | www.pstu.ac.bd |
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস
জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় পটুয়াখালী কৃষি কলেজ; যা ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কৃষি কলেজাটিকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্বোধন করেন। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। প্রথমিকভাবে এর অবকাঠামো উন্নয়নে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
অবস্থান
PSTU এর মূল ক্যাম্পাসটি প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে এবং বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে প্রায় ৩৮ কিমি দক্ষিণে। আউটার ক্যাম্পাসটি বরিশাল জেলার অন্তর্গত বাবুগঞ্জে অবস্থিত।
বিস্তারিত দেখুন গুগল ম্যাপে
যোগাযোগের ঠিকানা হল-
- পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- প্রধান ক্যাম্পাস (দুমকি, পটুয়াখালী), আউটার ক্যাম্পাস (বরিশাল, বাবুগঞ্জ)।
- যোগাযোগ :04427-56003
- ইমেইল :registrar@pstu.ac.bd
- ওয়েবসাইট :www.pstu.ac.bd
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
৭২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস; এর মধ্যে ৩৫ একরের ওপর মূল ক্যাম্পাস আর এর অদূরে ৩৭ একর জমির ওপর বিশাল কৃষি গবেষণা খামার। মূল ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের সামনে বৃক্ষশোভিত সুদীর্ঘ একটি লেক রয়েছে। ক্যাম্পাসের উত্তর-পশ্চিমাংশে অত্যাধুনিক ডিজাইনের পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল বিদ্যমান। একাডেমিক ভবন থেকে হোস্টেলে যাওয়ার পথেই মসজিদের অবস্থান। মসজিদের পাশেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং এর উল্টো দিকে রয়েছে লাইব্রেরি ভবন। একটি প্রশস্ত রাস্তা ক্যাম্পাসের ওপর দিয়ে পুবের পীরতলা থেকে পশ্চিমের পটুয়াখালী-বাউফল মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। এ সড়কের দক্ষিণ দিকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আবাসিক কোয়ার্টার আর এর দক্ষিণে রয়েছে ‘সৃজনী বিদ্যানিকেতন স্কুল এন্ড কলেজ’ নামের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মূল ক্যাম্পাসের পুব দিকে পীরতলা বন্দর পেরুলেই ৩৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কৃষি গবেষণা খামার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে একটি আউট ক্যাম্পাস; যা বরিশাল জেলার খানপুরা বাবুগঞ্জে ১২.৯৭ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত।বহিঃস্থ ক্যাম্পাসটি বরিশাল জেলা শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত।। সাগর সৈকত কুয়াকাটায় ফিশারিজ ফ্যাকাল্টি, সমুদ্র বিজ্ঞান ও ফরেস্টি বিজ্ঞানসহ তিনটি পৃথক অনুষদ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলসমূহ
ছাত্র হলসমূহ |
ছাত্রী হলসমূহ |
১.শের-ই-বাংলা হল-১ | ১.কবি বেগম সুফিয়া কামাল হল |
২.শের-ই-বাংলা হল-২ | ২.ফজিলাতুন্নেছা হল’শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল(বরিশাল ক্যাম্পাস) |
৩.এম.কেরামত আলী হল | |
৪.বঙ্গবন্ধু হল | |
৫.ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হল(বরিশাল ক্যাম্পাস) |
এই আবাসিক হলে প্রায় ৩০০০ জন ছাত্র-ছাত্রী অবস্থানের সুযোগ পায়। ভর্তির পর ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থী হলে থাকার সুযোগ পায়। মাস্টার্সদের জন্য একটি এনেক্স ভবন নির্মিত হয়েছে।
পবিপ্রবি এর লাইব্রেরি
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। দুই তলা বিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবনে ২০ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের একাডেমিক বই, ভলিউম, সাময়িকী রয়েছে। এই লাইব্রেরীর ভিতরে রয়েছে মুজিব কর্ণার; যেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক প্রায় ১০০ টির মত বই রয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার উদ্দ্যেশ্যে আসতে পারে এবং নিড়িবিলি পড়াশোনা করতে পারে। এখানকার সাইবার কেন্দ্রে ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া হয়।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিঃস্থ ক্যাম্পাসে দুই তলা বিশিষ্ট একটি লাইব্রেরি রয়েছে।
পবিপ্রবি এর শিক্ষা পদ্ধতি
চারটি অনুষদ নিয়ে শুরু হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম এবং বর্তমানে আটটি অনুষদে কার্যক্রম চলমান; অনুষদগুলো হলোঃ কৃষি অনুষদ, ব্যবসা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা অনুষদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ এবং এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ(ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন ও এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী)(বরিশাল ক্যাম্পাস), মৎসবিজ্ঞান অনুষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ, নিউট্রিশন ও ফুড ম্যানেজমেন্ট অনুষদ এবং ল এন্ড ল্যান্ড এডমিনিষ্ট্রেশন। কৃষি অনুষদে ২০০ জন, এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ (ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন এ ৬ ০জন ও এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী ৬০ জন) এবং বিবিএ ও সিএসই-তে ৭০ জন করে শিক্ষার্থী প্রতি সেশনে ভর্তির সুযোগ পায়। ২০১৫-১৬ সেশনে চালু করা হয় ব্যাচেলর অফ ল ইন ল এন্ড ল্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন প্রদানের মাধ্যমে একটি নতুন অনুষদ।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকার কোর্স ক্রেডিট সিস্টেম পদ্ধতি চালু রয়েছে। সেমিস্টার পদ্ধতির এ শিক্ষা ব্যবস্থায় কোর্স যথাসময়ে শেষ হয় বিধায় কোনো সেশনজট থাকে না। আটটি সেমিস্টারে শিক্ষাপর্ব শেষ হয়। এ ছাড়াও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই সর্বপ্রথম ২০০২ সালে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষা চালু করা হয়। হাতে-কলমে শিক্ষা দানের জন্য এখানে রয়েছে ১৪টি সমৃদ্ধ গবেষণাগার বা ল্যাবরেটরি, যা বর্তমানে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
ডি ইঞ্জিনিয়ার্স নিউজ এর পোর্টালে ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকল আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের নিউজ পোর্টাল ভিজিট করুন এবং ফেসবুক পেজে লাইক/ফলো দিয়ে রাখুন।